রবিবার, ২৯ ডিসেম্বর, ২০১৩

সুপারম্যান...!

খুব ছোট্টবেলায় একদিন আমি হারিয়ে গিয়েছিলাম। হারিয়ে যাবো বলে হারিয়ে যাইনি... মিছিলে গিয়েছিলাম... তখন মিটিং-মিছিল কি তা বুঝার মত ক্ষমতা ছিলনা আমার। শুধু দেখতাম একদল লোক আসত বাবার কাছে, কিছু একটা নিয়ে তারা খুব উদ্বিগ্ন থাকতো, বিমর্ষ থাকতো...বাবাকেও দেখতাম কি যেন ভাবতো সারাক্ষন। আমি জানতে চাইলে বলতো “তুমি এখন এসব বুঝবেনা মা... আর একটু বড় হও তখন বুঝবে...তোমাকে যে বুঝতেই হবে”...! সেদিন আমাদের বাড়ির নিকটস্থ এক বাজারে মিটিং হবে... “ক্ষেতমজুর সমিতির” মিটিং, সাজ সাজ রব, যার কিছুটা প্রভাব পরেছে আমাদের বাড়ীতেও কারণ আড়াই হাত লাঠি বানানোর কাজ চলছে আমাদের বাড়ীতে...আমার খুশি আর ধরেনা... একবার এই চাচার কাছে যাই লাঠি দেখি আর একবার আর একজনের কাছে... এভাবে সেই সময় এলো আমিও বাবার সাথে যাবো কিন্তু কেউ যেতে দেবেনা... আমিতো যাবই...শেষে বাবা বললেন ঠিক আছে যাবে কিন্তু আমি যখন চলে আসতে বলবো চলে আসতে হবে... আমি বললাম যে আমি মিটিং দেখেই চলে আসবো...! মঞ্চের একপাশে আমাকে বসিয়ে বাবা মঞ্চে উঠলেন...একে একে “ক্ষেতমজুর সমিতির” সিনিয়র নেতারাও উঠলেন...যাদের সবার কাঁধে চড়েছি আমি...! আমি তো তাদের দেখে লাফিয়ে উঠলাম, মিটিং শুরু হলো...একের পর এক বক্তব্য চলছে...সবাই হাত নেড়ে নেড়ে কি সব কঠিন কঠিন কথা বলছে সব আমার মাথার উপর দিয়ে যাচ্ছে... সব শেষে বাবার পালা... তিনিও দেখি হাত নেড়ে কি সব শক্ত কথা বলছেন... কথার মধ্যে কি ভয়ানক তেজ আর ক্ষোভ, এ যেন আমার বাবা না... এ এক অন্য মানুষ... বাবা ভুলে গেলেন আমার কথা... এক সময় বাবা কি যেন ঘোষনা দিলেন সাথে সাথে ২/৩ হাজার মানুষ এক লাফে উঠে দাঁড়িয়ে লাইন ধরে আগাতে লাগলো...সবার লাঠিগুলো উপর দিকে... মুখে শ্লোগান... “আড়াই হাত লাঠি ধরো, খাশ জমি দখল করো”... “কেউ খাবে কেউ খাবে না, তা হবেনা তা হবেনা” “দুনিয়ার মজলুম, এক হও এক হও”...! আমার একটুও ভয় লাগছেনা... আমিও মিছিলের ভেতরে ঢুকে গেলাম, আমার দিকে কারো খেয়াল নেই...সবাই একতালে একছন্দে এগিয়ে চলছে...আমি ভয় পাচ্ছিনা কারন একটাই... বাবা-কাকা রা সবাই তো সামনে আছে! এভাবে মিছিলের সাথে কখন বাড়ি পার হয়ে ৩ কিঃ মিঃ দূরে আর একটা বাজারে চলে গেছি... তখন রাত ৮টা... বাড়ীতে কান্নাকাটি শুরু হয়ে গেছে...মাইকিং এর প্রস্তুতি চলছে...এমন সময় পাশের বাড়ীর কাজের ছেলে (এখনকার ভাষায়) আমরা যাদের কোলে পিঠে চড়ে মানুষ “তারা মিয়া” (তারো ভাই) এর কাধে চড়ে আমি এসে হাজির। ঘড়ির কাঁটা তখন ১০টা ছুঁই ছুঁই করছে... বাবা কেও বিমর্ষ দেখাচ্ছে... মায়ের বকুনি খেয়ে কপালে হাত দিয়ে শুয়ে আছেন... তারো ভাইয়ের কাঁধ থেকে এক হেচকা টানে “মা” আমাকে নামিয়ে আমার পিঠের উপর দিয়ে এক মহুর্তের জন্য সিডর বইয়ে দিলেন, আমাকে সেইফ করার জন্য তারো ভাই মাঝখানে এলেন বাকিটা উনার উপর দিয়েই গেল আমি তখন দরজার পেছনে সেইফ জোন এ লুকিয়ে রইলাম কিছুক্ষন...অবশেষে আমার দাদী আমাকে আবিস্কার করে হাত মুখ ধোয়ালেন খাওয়ালেন ঘুম পারালেন। এইখানে একটা প্রশ্ন আসতেই পারে যে তারো ভাই আসলো কোত্থেকে? বলছি... মিছিলটা যখন বাজারে গিয়ে শেষ হলো সবাই যার যার মত চলে যেতে লাগলো দেখি আমার পাশে কেউ নেই... তখন সত্যি সত্যি ভয় পেলাম কিছু না ভেবেই কান্না শুরু করে দিলাম... এমন সময় পাশ দিয়ে তারো ভাই যাচ্ছিল... সে ভাবলো এই অন্ধকার-এ কে কাঁদছে দেখি তো... বলে সে কাছে আসলো... টর্চ এ চাপ দিয়ে দেখে আমি... আমাকে দেখে তার কি হা হুতাশ...তুমি এখানে কেন? হায় হায় রে... মামী তো (আমার মা) আস্ত রাখবেনা, এই বলে আর দেরী না করে আমাকে কাঁধে তোলে নিল। আমি এখন অনেক বড় হয়েছি... বাবা কাকা রা সবাই এখন অন্য ভুবনের বাসিন্দা। এখন আমি বুঝতে পারি তাঁদের মিটিং-মিছিলের কারণ, তাঁদের বিমর্ষ থাকবার কারন গুলোও এখন আমার কাছে স্পষ্ট... বাবা সরাসরি অস্ত্র হাতে নিয়ে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহন করেননি,যা করেছেন সেটাও নেহায়েত যুদ্ধের চেয়ে কোন অংশে কম না... জীবনের ঝুকি নিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য চাল, ডাল, টাকা-পয়সা যোগার করেছেন। সময় মত পৌছেও দিয়েছেন মুক্তিদের হাতে। কিন্তু কোনদিন বাবা এসব স্বীকার করতে চাইতেন না... খুব বেশি প্রচার বিমুখ ছিলেন আমার বাবা। যখন দেখি মুক্তি যুদ্ধের বিরোধীরা মুক্তিযোদ্ধার সনদ নিয়ে রাজ্যের সব সুবিধা ভোগ করছে তখন বাবার প্রতি খুব রাগ হয় আমার... অনেকেই বাবাকে সনদ নেয়ার জন্য জোর করেছেন তখন এই ভেবে যে উনি যা করেছেন তাও একধরনের যুদ্ধ... বাবার বিবেক সায় দেয়নি... তাই তিনি নেননি...এই একটা জায়গায় তিনি ছিলেন আপোষহীন... নিজের বিবেকের কাছে সবসময় পরিস্কার থেকেছেন... আমাদেরকেও সে ভাবেই বড় করার চেষ্টা করেছেন। কতটা হয়েছি জানিনা...! আজ এতসব কথা বলছি একটা কারনে- ৩০ বছর আগে স্বাধীনতার ১০ বছর পর বাবা-কাকা-দের প্রতিবাদ যাদের বিরুদ্ধে ছিল এখনও তো তারাই বহাল তবিয়তেই আছে...! এখন আমি আমার অল্প জ্ঞান দিয়ে যতটুকু বুঝি তা হলো এই পৃথিবীতে দুইটাই শ্রেনী আছে... ১. শোষক শ্রেনী ২. শোষিত শ্রেনী। আর সেটা সৃষ্টি লগ্ন থেকেই। মাঝে মুক্তিকামী মানুষগুলো তাঁদের জীবনটা কে বলির পাঠা ভেবে বলি দিয়েছে আর কিছুই না...! আমাদের দেশের কথাই বলি কি লাভ হয়েছে ৩০ লক্ষ প্রাণের বিসর্জন দিয়ে? যে স্বপ্ন নিয়ে সাধারন মানুষগুলো কি অবলীলায় তাঁদের জীবন বাজি রেখে যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করলো আসলেই কি আমরা সেই স্বাধীনতার স্বাদ কি পেয়েছি গত ৪২ টা বছরে? মুক্তিকামী মানুষগুলো স্রেফ চেয়েছিলেন যাতে আমরা (পরের প্রজন্ম) ভাল থাকি... কিন্তু কতটা ভাল আছি আমরা? আমরা তো আজও শোষন আর নিপীড়ন থেকে নিজেদের মুক্ত করতে পারছিনা... একসময় বিনদেশীরা শোষন করতো, রক্ত চুষে খেতো, এখন নিজেরাই নিজেদের রক্ত দিয়ে রক্তস্নান করে বড় বড় বক্তৃতা দিচ্ছি, পরিশুদ্ধ হওয়ার শ্লোগান দিচ্ছি... ছিঃ...! আমার এখন ছিঃ বলতেও ঘেন্না লাগে। ছিঃ তো মানুষের জন্য বলা কিন্তু...! ১৯৭১ এর পর যা যা হয়েছে, যতগুলো সাধারন মানুষের প্রাণ গেছে সে সবের দায় কার? কে নেবে ওইসব খেটে খাওয়া সাধারন মানুষদের পরিবারের দায়িত্ব? আছে এমন কোন দল/শ্রেনী এ দেশে? রাজনীতি নিয়ে আমি কোন কথা বলিনা কারন এই জিনিষটা আমি বুঝিনা। যে জিনিষ বুঝিনা সেই জিনিষ নিয়ে কথা বলার সাহস হয়না আমার। আমি শুধু বুঝি জাতি হিসাবে মানুষ হিসাবে আমার আজন্ম অধিকার যা ৩০লক্ষ প্রানের বিনিময়ে অর্জিত হয়েছে, একটা স্বাধীন দেশ... একটা মানচিত্র... একটা পতাকা... সেই স্বাধীন দেশের নাগরিক হিসাবে আমি পেতে চাই আমার সব ধরনের নিরাপত্তা, আমার মৌলিক চাহিদা মেটানোর জন্য সুস্থ্য একটা পরিবেশ। যারা এ দেশের মাথা কিনে নিয়েছে বলে ভাবে, যারা দেশটাকে নিজেদের বাপ-দাদার সম্পত্তি মনে করে যা খুশি তাই বলছে, দিন কে রাত আর রাত কে দিন করছে তাঁদের কাছে আমার একটাই প্রশ্ন, বুকে হাত দিয়ে বলুন তো “আপনারা যার যার নিজের বিবেকের কাছে কতটা পরিস্কার”? ১৯৭১-কে বাঙ্গালী জাতি কখনও ভুলতে পারবেনা তারপরও একটা বিষয় আমাকে স্বস্তি দেয় যে তখন যা হয়েছে তা তো বিনদেশীরা করেছে... তাঁদের তো আর আমাদের প্রতি কোন মায়া-মমতা থাকার কথা ছিলনা কিন্তু ২০১৩ সালে এই ডিজিটাল বাংলাদেশ এ যা হচ্ছে, আমাদের অমুক দল তমুক দলের সোনার ছেলেরা যা করছে তা কি ’৭১ কেও হার মানায়না? যে দল এ যত বেশি লাশ পড়বে সেই দল তত বেশি লাভবান... লাশ নিয়ে এই যে একটা নোংরা প্রতিযোগিতা এটা কি আপনারা যারা রাজনীতি করেন আপনাদের ভাবায়না? আর ভাবাবে কিভাবে? লাশগুলো তো আর আপনাদের আপনজনদের কারো না... লাশগুলো তো শোষিত শ্রেণীর...যাদের জন্মই আজন্ম পাপ... তারা তো এভাবেই কুকুরের মত মরে পরে থাকবে রাস্তায়...তাইনা? যাত্রীবাহী চলন্ত বাসে যারা আগুন দিচ্ছে তারা তো আর ভিন্ন দেশ থেকে উড়ে এসে আগুন দিয়ে/বোমা মেরে আবার উড়ে চলে যাচ্ছেনা তাইনা? এইখানেও সেই পুরনো কাহিনী, শোষক শ্রেনী আর শোষিতদের লেনা-দেনা... এই পযর্‍ন্ত যত পিকেটিং –হামলা হয়েছে সেইখানে তো কোন ধনীর দুলালকে পাওয়া যায়নি... কেন? কারন তারা তো না চাইতেই সব পেয়ে যাচ্ছে আরাম-আয়েশ, গাড়ী-বাড়ী-নারী সব তাদের হাতের মুঠোয়... নামী দামী বেসরকারী বিস্ববিদ্যালয়ে পরবে আর ইয়াবার ব্যবসা করে রাতারাতি আঙ্গুল ফুলে কলা গাছ বনে যাবে। আর এক শ্রেনীর মানুষের দেয়ালে যখন পিঠ ঠেকে যায় তখন স্বভাবতইঃ সে দিগ্ববিদিক জ্ঞান শূন্য হয়ে পরে... আর শোষক শ্রেনীর টার্গেট-এ পরিনত হয়ে সহজেই জীবন জীবিকার তাগিদে মোটিভেট হয়... যা বলে তাই করে বিনিময়ে ভাল থাকার প্রতিশ্রুতি...বিলাস-বহুল জীবনের হাতছানি... মন্দ কি? আমার খুব কাছের মানুষ বলে আমার মাঝে কোন চেতনা নেই, স্বদেশ-প্রেম নেই। হ্যাঁ কিচ্ছু নেই আমার মাঝে... আমি এখন এই দেশ থেকে পালাতে পারলে বেঁচে যেতাম, জানি পৃথিবীতে এমন কোন দেশ নেই যেখানে শোষক শ্রেনী নেই তাও শান্তি এই ভেবে যে এরা আমার কেউ না... এদের অন্যায় অত্যাচার সইতেই হবে...ব্যাস...! আমার মাঝে যা ছিল চেতনা, দেশপ্রেম, স্বপ্ন ওসব অনেক আগেই বস্তাবন্দী করে ডাস্টবিন-এ ফেলে দিয়েছি... এসব শব্দগুলো আমার কাছে এখন খুব পুরনো আর সস্তা/বস্তা পঁচা মনে হয়... এসব শুধু বড় বড় লেকচার-এ কাজে লাগে... আমি কখনও লেকচার দেবনা তাই এগুলো আমার কাজে লাগবেনা...! আমি দেশের একজন সু-নাগরিক হিসাবে নিজেকে জানি এবং মানি। এমন কোন মানুষ নেই যাদের কাছে আমি আমার যোগ্যতা অনুসারে একটা কাজের জন্য ধর্না দেইনি... সবাই শুধু নীতি কথা শুনায়...তাঁদের কথা শুনে মনে হয় নীতিতে ভাসছে দেশ... কোথাও কোন অনিয়ম নেই...! এখন আর শুধু মেধা দিয়ে চাকরী হয়না মামা-চাচার জোড় লাগে / টাকার জোড় লাগে আর এক্সট্রা যা লাগে সেটা হলো উদারপন্থী হতে হবে... ড্রেস আপ হবে এমন যাতে মেয়েদের আকর্ষনীয় জায়গা গুলো .........., বেশিরভাগ জায়গায় বিশেষ করে মেয়েদের সাথে চাকরি দেয়ার নামে যা করা হচ্ছে তা ভাবতেই আমার গাঁ ঘিন ঘিন করে। এইখানেও সেই একই কাহিনী... শোষক আর শোষিতের লীলা-খেলা। আর কিছুইনা... মেয়েরা আজ পন্য... কেউ বুঝে শখ করে পন্য হয় আবার কেউ না বুঝে/ কারো আবার অন্য কোন অপশন নেই বলে...! বেশিরভাগ জায়গায় আজ ভায়োলেশন-এ ছেয়ে আছে। যেন এটাই নিয়ম এটাই নীতি... এইতো আমার স্বাধীন দেশ... যেখানে আমরা সবাই জিম্মি শোষকদের হাতে...! আচ্ছা শোষক আর শোষিত এর অনুপাত-টা কেমন? ১০: ৯০ নাকি ২০: ৮০? আমার মনে হয় ১০% মানুষের হাতে জিম্মি আমরা ৯০% মানুষ...! আর এই একটা কারনে আমার এখন সুপারম্যান হতে ইচ্ছে করে। এই ১০% এর একটা একটা শোষককে টুটি চেপে ধরে উড়িয়ে নিয়ে গিয়ে এভারেষ্ট এর সর্বোচ্চ চূড়া থেকে ফেলে দিতে ইচ্ছে করে আজন্মের মত। প্রভুকে বলি পরের জেনারেশন এ যেন প্রতিটা ঘরে ঘরে একটা করে সুপারম্যান পাঠান... না হলে এসব অপরাধী আর অপরাধের দমন সাধারন মানুষের জন্য দূরূহ কাজ হবে...! তাই বলে ভেবোনা আমি হতাশ... জানি একদিন অন্ধকার কেটে যাবে... ভোর হবেই ইনশাল্লাহ... সেদিন হয়ত আমি থাকবনা... তাও চাইবো সেদিনটা যেন খুব বেশি দূরে না হয়... আমাদের পরের প্রজন্ম যেন সুখে থাকে একটু শান্তিতে থাকে...!

মঙ্গলবার, ১৬ জুলাই, ২০১৩

উদ্দেশ্যহীন যাত্রা এবং অতঃপর...!

অনেক দিন লিখতে বসিনা আমি। লেখার খেইটাই হারিয়ে ফেলেছি আজকাল। সবকিছুতেই কেমন যেন একটা অনীহা এসে ভর করে, ইচ্ছে করলেও তার থেকে বেরিয়ে আসতে পারিনা, শত চেষ্টাতেও না। জীবনে চলার পথে অনেক বাঁধা আসে এটাই নাকি নিয়ম, আমিও সেই নিয়ম মেনেই বুড়ি হয়ে গেলাম কিন্তু সেই বাঁধার ওপারে কি আছে তার সন্ধান যে আজও পেলামনা।! একটা সময় ছিল সব ভাল লাগত যা ভাল লাগার নয় তাও, তখন কারনে অকারনে অনেক স্বপ্ন বুনতাম, অনেক কিছুই ভাবতাম, বাস্তবায়নও করতাম সেই ভাবনাগুলো আর এখন? হাহাহাহা... আরে এখন তো ভাবতেই ভুলে গেছি...! জীবনের সেই ছন্দে চলার তারটা কে যেন কেটে দিয়েছে আনমনে... আনমনে নাকি সযতনে? জানিনা...! এখন মনে হয় আমি নিজেকেই সবচেয়ে বেশি ফাঁকি দিয়েছি শুধু পড়াশুনা ছাড়া। নিজের কাছে কখনও জানতে চাইনি আমি ঠিক কি চাই? সেটা কি কেবলই দায়িত্ব আর কর্তব্যের ধূম্রজালে আটকে পরে? নাকি নিজের প্রতিই ছিল আমার চরম অবহেলা আর অসচেতনতা? কি জানি হবে হয়ত কিছু একটা...! কথাগুলোতে কি খুব বেশি হতাশার সুর বাঁজছে? নাহ আমি হতাশ নই...আমি হতাশ হতে জানিনা... সবার জীবন একরকম হবে এমন কোন কথা নেই...! আমি বিশ্বাস করি এখনও আমার জন্য ঠিক যতটুকু বরাদ্দ আমি ততটুকুই পাবো তার বেশিতো কিছুতেই নয়...সে জন্যই আমি হতাশ নই...তবে জীবনে একটা পজিশন থাকা চাই সেটা ছোট হোক অথবা বড়...! তাহলে অন্ততঃ নিজে একটু স্বস্তি পাওয়া যায় নিজের কাছে! সব কিছুর পরও আমি ভাল থাকি কিভাবে জানিনা...শত অবহেলা আর অপমান নিয়েও বেঁচে থাকি... বেঁচে থাকার প্রতি মানুষের কি চরম লোভ তাইনা? আমিও সেই লোভ সামলাতে পারিনা... তাই বেঁচে থাকি...ভালো থাকি...যতদিন থাকা যায় নিজের মত করে...! মানুষ আসলে নিজের জন্যই বেঁচে থাকে... কেউ যেমন কারো হতে পারেনা আবার কেউ কারো জন্যে বেঁচেও থাকেনা...! নিজের প্রয়োজনেই মানুষ অন্যকে ভালবাসার ভনিতা করে...আর বলে তোমাকে ভালবাসি...হাহাহাহাহা...কি হাস্যকর আর কি ভয়ানক মিথ্যে...! ভালবাসা নিয়ে ২টা সত্যি আবিস্কার করেছি আমি... 1. I love u bcz i need u... 2. u love me bcz im capable to meet ur needs...! আমি এটা নিয়ে কোন বিতর্কে যাবনা... মতবিরোধ থাকতে পারে তবে আমি এটা বিশ্বাস করি মনে প্রানে...! কি লিখতে গিয়ে কি লিখছি...যাই হোক জীবন যেখানে যেমন... যে যেভাবে পারো জীবনের সাথে কোপ আপ করো...! আর কোন ওয়ে নেই...! তবে উদ্দেশ্যহীন ভাবে নয়...আগে গন্তব্য ঠিক করে তারপর বেরিয়ে পরতে হবে... আল্লাহ ভরসা...!

মঙ্গলবার, ১৭ জানুয়ারী, ২০১২

প্রতিদান চাইনা শুধু চাই একটু সহমর্মিতা...!!!

একটু একটু করে ঘড়ির কাঁটা এগিয়ে চলে ঠিক রোজ যেমন করে চলে যায় সময় নামক দানবটা। বেলার ভিতরে কেমন যেন একটা অসহায়ত্ব বাসা বেঁধেছে আজকাল। খুব হতাশ লাগে, ভিতরে কেমন যেন অদ্ভুত অস্থিরতা কাজ করে, প্রাণ ভোমরাটা কোথায় ঊড়ে চলে যেতে চায় যেন।

ইদানীং বাবা কে খুব বেশি মিস করে বেলা। প্রতিটা মুহুর্তে বেলার মনে হয় বাবা থাকলে এই কাজটা খুব সহজ হতো, এইটা অন্যরকম হতো, ওইটা হয়ত ঘটতই না...হাবিজাবি আরো কত কি...! বেলা সব মেনে নিতে জানে, মুখ বুজে সয়ে যেতে শিখে গেছে সমস্ত অপমান আর অবহেলা। এসব নিয়ে বেলার আর ভাবতে ভালো লাগেনা যে কে তাকে বুঝল, কে তাকে বুঝলনা এমনকি ওই পরিমানটুকুও জানতে ইচ্ছে করেনা যে কে তাকে কতটুকু বুঝল? কি দরকার বুঝুকনা যে যার মত করে। একটা মানুষের ধারনা'টা বদলে দেয়া খুব সহজ কাজ না। আর কেউ যদি কাউকে তাঁর নিজের মত করে বুঝে নেয় নিক না...ক্ষতি কি? বেলাও ঠিক তাঁর মত করে প্রতিটা মানুষকে বুঝে নেয়ার চেষ্টা করে। মানুষ কে চিনতে অথবা বুঝতে বেলা যে ভুল করেনা তা কিন্তু নয়...শত হলেও বেলাও তো মানুষের পর্যায়ে পরে (যদিও কেউ কেউ সেটা মানতে বা স্বীকার করতে চায়না) তবে বেলা নিজেকে মানুষ ভাবতে ভালবাসে।

বেলা সব মেনে নিতে শিখে গেলেও নিজের পরিবার বা নিজের বাবা-মা কে নিয়ে কোন কটু কথা সে এখনও সইতে পারেনা, মাথায় যেন খুন চেপে যায়, ভিতরের অশুরটা জেগে উঠে পূর্ণঊদ্যোমে...তাকে থামাতে খুব কষ্ট হয় বেলার...খুব কষ্ট...!

কাছের মানুষদের বেলা কতটা ভালোবাসে, কতটা ফিল করে সেটা কাছের মানুষরা টের পেল কি পেলনা এ নিয়ে বেলার বিন্দুমাত্র মাথা ব্যাথা নেই। বেলার প্রতিটা মূহুর্ত কাটে প্রিয়মানুষগুলোর মংগল আর শান্তি কামনায়, বিনিময়ে বেলার কোন চাওয়া পাওয়া নেই তাঁদের কাছে, কিন্তু সেইসব প্রিয়মানুষগুলোর কাছ থেকে বেলা একটু সহমর্মিতা আশা করতেই পারে, নাকি এইটুকু প্রত্যাশা করাটাও অন্যায়? কি জানি হবে হয়ত...! আজকাল সব কিছুর ডেফিনিশন বেলার কাছে ঊল্টা পালটা মনে হয়...খুব বেশি উলটা পালটা...!!!

সোমবার, ১২ ডিসেম্বর, ২০১১

মানুষরূপী ছারপোকারা...!

সুমনা’র মনটা বিষিয়ে আছে অনেকক্ষন থেকেই। নিজের টেবিল এ থুম মেরে বসে আছে আর হাতের কাছে যা পাচ্ছে তাই ছুড়ে ফেলে দিচ্ছে। একটু আগে সে বস’এর ঝাড়ি খেয়েছে যাকে বলে রাম ঝাড়ি। সে কেন ঝাড়ি খেল সেটা ক্যালকুলেশন করছে বসে বসে কিন্তু হিসাবটা মিলছেনা কিছুতেই। অবশ্য সুমনার বস’কে সে থুরাই কেয়ার করে। ওই বেটাকে তাঁর রক্তচোষা ছারপোকা ছাড়া কিছুই ভাবতে ভাল লাগেনা। মানুষ এত অমানুষ হয় কি করে তা ভেবে পায়না সুমনা। আর উপর আল্লাহ এদেরকে আনলিমিটেড সম্পদ দিয়ে রাখে যা কিভাবে কাজে লাগাবে সেটাই বুঝে উঠতে পারেনা এরা। ঠিক এই মুহুর্তে সুমনার মেজাজ খারাপ হচ্ছে আল্লাহর উপর...যা আজকাল প্রায়ই হয়। ইদানিং সুমনার কেবলই মনে হয় স্বয়ং বিধাতাও বুঝি তাঁর উপর অবিচার করছেন তা না হলে...! আর ভাবতে পারেনা সুমনা। মনে মনে বস’কে ইচ্ছেমত গালিগালাজ করছে। এর মধ্যে দুইবার সালাম দিয়েছে বস। তারপরও সে নড়ছেনা বসেই আছে। ধীরে ধীরে সন্ধ্যা নেমে এসেছে। সে জানে এখন কিছু অহেতুক কাজ দিবে বস যা করতে গিয়ে সে আরও বিরক্ত হবে আর গালি’র পরিমান বেড়ে যাবে (মনে মনে)। সুমনার বস’এর ইচ্ছেই হল কিভাবে ষ্টাফদের বেশিক্ষন আটকে রাখা যায়। সারাদিন বসিয়ে রেখে ঠিক বের হওয়ার আগমুহুর্তে একটা কাজ ধরিয়ে দেবে যা শেষ করতে আরও ঘন্টা খানেক মিনিমাম লেগে যাবে।

রোজ রোজ এমনটা আর ভাল লাগেনা সুমনার কিন্তু কি করবে সে? ঘরে বাবা অসুস্থ, মা স্কুল টিচার, ছোট ভাই বোনদের পড়াশুনা সব মিলিয়ে অনেক খরচ যা মায়ের একার পক্ষে সম্ভব না। সুমনা চায় মা'কে একটু রিলিফ দিতে। তাই প্রতিদিন যখনই জবটা ছেড়ে দিতে ইচ্ছে করে ঠিক তখনই তাঁর সামনে ভেসে উঠে অনেক ক্লান্তিতে ভরা মায়ের মায়াবী মুখখানা । সে কারণে শত কষ্টেও সুমনা দাঁতে দাঁত চেপে সব সয়ে যায়। অবশ্য মাস গেলে ভাল একটা এমাউন্ট আসে তাঁর হাতে। টাকাটা সে মায়ের হাতে তুলে দিয়ে তৃপ্তির ঢেকুর তুলে কিছুটা।

বস ডেকে নিয়ে আজও যথারীতি কিছু কাজ ধরিয়ে দিলেন। যা শেষ করতে সুমনার সাড়ে সাতটা বেজে যায়। সবাই চলে গেছে মুটামুটি দু-তিন জন ছাড়া। কোনমতে কাজটা শেষ করে ঘরের দিকে পা বাড়ায় সে। রাস্তায় প্রচন্ড যানজট। ইদানিং মাত্রাতিরিক্ত বেড়েছে তা। সারা রাস্তা সুমনা বস’কে গালি দিতে থাকে যেমন করে ঠিক ছোট্টবেলায় বন্ধুদের সাথে মারপিট করে হেরে গেলে গালি দিত। সে মনে মনে বস’কে বলছে “বেটা খচ্চর! তোর যেন কলেরা হয় যাতে করে ১৫দিন তুই আর অফিস না আসতে পারিস”। উহ কি ভালোটাই না হত ১৫ দিন ওই বদ লোকটা অফিস না আসলে। তারপর আবার গালি দিচ্ছে “ তুই একটা 'ডিওজি' সাব...তুই গু’ খা...কাঁচা গু’ না...শুকনা গু’...তেলের মধ্যে ফ্রাই করে কড়মড় করে চিবিয়ে খা...শুয়োড় একটা”। আজও বুয়া এসে চিল্লাচ্ছিল বেতন হয়নি তাঁর। সুমনার খুব মায়া হল তাই সে তাঁর ব্যাগ খুলে ৭০০ টাকা দিয়ে দিল। আল্লাহ জানেন এই টাকা সে কবে পাবে। সেদিন ড্রাইভার এসে অনেক দুঃখ প্রকাশ করল সুমনার কাছে। কাকডাকা ভোর থেকে রাত ১২টা/১টা পর্যন্ত ডিউটি করে। কোন ডে অফ নেই তাঁর অথচ অসুখ বিসুখ হলে একদিন ছুটিও পায়না সে বেতন কেটে রাখে। বেটা এমন বদ এর বদ দু-চার পয়সা পর্যন্ত হিসাব করে তখন এত বিরক্তি লাগে সুমনার, সে ভাবে তখন ৫০ পয়সা দান করে আসি গিয়ে রক্তচোষাটা’কে। মনে হয় সে হাসিমুখে হাত পেতে তাও নেবে। খচ্চর একটা! কতকাল এরা এভাবে জুলুম করে যাবে অসহায় মানুষগুলোর উপর তা আল্লাহ পাকই জানেন!!!

অফিসটাতে রুলস রেজুলেশন বলতে কিচ্ছু নেই...চরম স্বেচ্ছাচারিতা যাকে বলে। শুনেছি প্রাইভেট সেক্টরগুলোর নাকি এমন বেহাল দশাই আজকাল। এসব শুনে সুমনার মনটা আরও বিষিয়ে উঠে। প্রতিটা জায়গাতেই ডিসক্রিমিনেশন চরমে। অনেক অফিসে তো মেয়েই নেবেনা আর যারা নেয় তারা মেয়েটাকে কখনও মানুষ ভেবে বিচার বা বিশ্লেষন করেনা, তাঁর মেধার চেয়ে আউটলুকিং'টা বেশি গুরুত্ব পায়। কেমন যেন গা’ গুলায় সুমনার। সেও খেয়াল করেছে তার চেয়ে সিনিয়র কলিগদের মনোবৃত্তি। তাঁদের গসিপিং এর টপিক্সই হলো মেয়ে কলিগদের ড্রেসআপ আর আউটলুকিং নিয়ে। সুমনা শিউড়ে উঠে যখন শুনে মেয়েদের শারীরিক ফিটনেস নিয়েও কথা বলে এরা। অনেক অফিস এ নাকি মেয়ে ষ্টাফদের ইমিডিয়েট বস’রা ইশারা ইংগিতে অন্যরকম অফার দেয়। না বুঝতে পারলে কাজ নিয়ে খারাপ ব্যবহার করে আর বিভিন্নভাবে হয়রানি করে, অনেকসময় সেই মেয়েটাকে চাকরি পর্যন্ত হারাতে হয়, সুমনা এমন একজনকে জানে যার চাকরি চলে যাওয়ার পেছনের কারণটা এমনই। সেদিন সুমনার খুব মন খারাপ হয়েছিল এসব শুনে, ভয়ও পেয়েছিল সে আর মনে মনে প্রভুকে বলেছিল “প্লিজ প্রভু সেভ টু অল অফ আস”। এ দিক দিয়ে সুমনা অনেক শান্তিতে আছে বলা যায়। অফিস কলিগরা ওকে মুটামুটি সামঝেই চলে আর তাছাড়া অনেক রেস্পেক্ট ও করে। সেটা সুমনা টের পায়। কেউ কেউ আছে সুমনা থাকা অবধি অপেক্ষা করে, একসাথে বের হয়। যাই হোক সব মিলিয়ে সুমনার আর জবটা ছাড়া হয়না। ভাবে কোথায় যাব? সব জায়গায়ই তো রক্তচোষারা উৎ পেতে আছে...! বিরক্তি আর ঘৃণা নিয়ে আবারও সব রক্তচোষা ছারপোকাদের উদ্দ্যশ্যে বলে উঠে “তোরা গু’ খা... কাঁচা গু’ না...শুকনা গু’...তেলের মধ্যে ফ্রাই করে কড়মড় করে চিবিয়ে খা...শুয়োড়ের দল”...!

বৃহস্পতিবার, ২০ অক্টোবর, ২০১১

জীবন নামক ধাঁধা...!

জীবন নামের এই অদ্ভুত যন্ত্রটার সাথে তাল মিলিয়ে চলতে ক’জন পারে? বরং চলতে হয় বলেই’না সবাই চলে। এমন একজন মানুষও আজকাল খুঁজে পাইনা যে বুকে হাত দিয়ে বলতে পারে আমি সুখী, আমি পরিপূর্ণ! একজীবনে এত অপূর্ণতা, এত হাহাকার নিয়েও মানুষ বেঁচে থাকে। সময় মানুষকে অনেক কিছুই শিক্ষা দেয়, সময়ের যাতাকলে পিষে পিষে মানুষ মরতে মরতে বাঁচতে শেখে, হারতে হারতে জিততে শেখে, ঠকতে ঠকতে ঠকাতেও শেখে...হা হা হা... কি অদ্ভুত তাইনা?

আমার না মাঝে মাঝে অমানুষ হতে ইচ্ছে করে, খুব খুব বেশি খারাপ হতে ইচ্ছে করে। কারণ একটাই...”মানুষ হতে পারিনি বলে, পারিনি খুব বেশি ভাল হতে” । ছোটবেলায় মা’ বলতেন যাই হওনা কেন “নাম্বার -১” হবে তা না হলে কোন মূল্যই থাকবেনা, এখন দেখছি কথাটা ১০০% সত্যি। হয় ভাল’ না হয় মন্দ’ এ দুটো’রই রাজত্ব। খুব ভাল হতে পারিনি বলে খুব মন্দ হতে ইচ্ছে করে। মিডল এ পরে থাকার অনেক যন্ত্রনা। যেমন যন্ত্রনার যাতাকলে পিষে মরে মিডল ক্লাস পরিবার গুলো।

জীবন নামের এই গোলক ধাঁধা’র চক্করে পরেছি সেই ছোটবেলা থেকেই। আর পরেছি ভাগ্য নামক অদ্ভুত এক শক্তির বিড়ম্বনায়। ভাবতাম ভাগ্যকে নিজেকেই গড়তে হবে তাই প্রাণপনে লড়েছি ভাগ্যকে গড়তে। কিন্তু প্রতিবার ভাগ্য আমাকে ঊষ্ঠা দিয়ে সিটকে ফেলে দিয়েছে, আবার ঊঠে দাঁড়িয়েছি নতুন রূপে, নতুনভাবে...ফলাফল “শূন্য”। তাই আজ আমি বড় ক্লান্ত। এতদিনে একটা কথা আমি ভাল করেই বুঝে গেছি যে আসলে মানুষের কোন সাধ্যি নেই কিছু করার। প্রতিটা কাজ, প্রতিটা ঘটনা আমার কেন যেন মনে হয় সিলেকটেড। যার বাইরে আমরা কেউ চাইলেও যেতে পারিনা। কোন কিছু প্ল্যান করে করতে পারিনি আজও। একটা কিছু হয়ত ভাবলাম যে এটা করব কিন্তু তাঁর আগেই অন্য কিছুর উদ্ভব। তারপর সব ছেড়ে ছূড়ে নিজেকে সমর্পন করা সেই সময় নামক অদৃশ্য দানবের হাতে আর খেলনা হয়ে তাঁকে সংগ দেয়া যতক্ষন না সে ক্লান্ত হচ্ছে!

আমার জীবনে আমি অনেক বড় বড় মানুষের সান্নিধ্য পেয়েছি, আমার এই ছোট্ট জীবনের সঞ্চয় বলতে তাঁদের ওই স্নেহ আর ভালবাসাটুকুই। আর এই স্নেহের কাঙ্গাল হতে গিয়ে বিড়ম্বনায় যে পরিনি তা কিন্তু নয়! আবার ঊল্টোটাও হয়েছে, বয়সে ছোটদের খুব বেশি মায়া আর স্নেহ করতে গিয়েও ছোট হয়েছি, অপমানিত হয়েছি। ঘৃণায়, লজ্জায় আর অপমানে মরে যেতে ইচ্ছে করেছে, পারিনি... তবে হ্যাঁ নিজেকে মেরে ফেলেছি বহুবার, আঘাতে আঘাতে ক্ষতবিক্ষত করে তিলে তিলে মেরেছি নিজেকে অনেকবার। সেই সব সত্তাদের প্রেতাত্মারা আমাকে রোজ অভিশাপ দেয়, আর সেই অভিশাপে আজ জর্জরিত আমার এই জীবন নামের চাকা।

জীবন নামের এই গোলক ধাঁধার চক্করে ঘুরতে ঘুরতে বেশ কিছু অভিজ্ঞতা হয়েছে আমার। কাউকে খুব বেশি স্নেহ/ভালবাসতে নেই। সত্যিকারের স্নেহ/ভালবাসা বুঝে এমন লোকের আজ খুব অভাব। অনেকটা অপাত্রে কন্যাদানের মত। আমি আমার জীবনে কখনও কোনকিছুর বিনিময় চাইনি কিন্তু আমার ভাগ্যে বিনিময় জুটেছে। ওই যে কথায় আছেনা যা চাইনা তাই পাই অনেকটা সে রকমই। আমি মানুষ ভালবাসি, আমি ভালবাসতে ভালবাসি আর সেটা নিজের সমস্ত সত্তা দিয়ে...যার জন্য যতটুকু করি আমি আমার মন থেকে করি, আমার সবটুকু শ্রদ্ধা, ভক্তি আর ভালবাসা দিয়ে করতে চেষ্টা করি। সেইখানে কোন ফাঁকি নেই, নেই কোন ভণিতা। সেটা ছোট-বড়, নারী-পুরুষ, ধর্ম-বর্ণ সবার ক্ষেত্রেই সমান রেসপেক্ট বোধ, সমান গুরুত্ব।

“মানুষ’কে স্রেফ মানুষ ভেবে ভালবাসা” আমার এই সহজ সমীকরণ’টাকে কেউ’ই সহজ ভাবে নিতে পারেনা, ঘুরিয়ে পেঁচিয়ে এমন জটিল বানায় যে বায়োলজির C-3 Circle কেও হার মানায়। আর বিনিময়ে আমার ভাগ্যে জুটে অবহেলা, অপমান, লাঞ্ছনা আর তিরস্কার। মেনে নেই আমি সব হাসি মুখে। কাউকে কিচ্ছু বলিনা, নিরবে নিভৃতে ভেতরে ভেতরে সেইসব মানুষ থেকে অনেক অনেক দূরে চলে যাই আমি যা হয়ত কেউ টেরও পায়না। অবশ্য তাতে কারও কিচ্ছু যায় আসেনা। কারও জন্যই কারো জীবন কখনও থেমে থাকেনা...সব চলে আগের নিয়মে, থাকেনা শুধু মায়াভরা মুখগুলোর নিস্পাপ হাসি, স্নেহমাখা সেই মধুর ডাক, আলতো করে নরম হাতের সেই ভালবাসার স্পর্শ আর কোমল ঠোঁটে মাথার উপর উষ্ণ আশীর্বাদের ছোঁয়া...!!!

পরে থাকে শুধু একফালি দীর্ঘস্বাসঃ...!!!

শুক্রবার, ১৪ অক্টোবর, ২০১১

অন্য জগত...!!!

কদিন ধরে মনটা খুব অস্থির, আর মাথাটাও বেশ এলোমেলো হয়ে আছে। সবকিছুই কেমন যেন উল্টা আর পাল্টা, পাল্টা আর উল্টা। নতুন কোনকিছুই এখন আর আগের মত টানেনা আমায়, নতুন সুর, নতুন লয়, নতুন ছন্দ সব কেমন যেন পানসে লাগে আজকাল। কিছু কথা গুছিয়ে রাখি সারাদিন, ভাবি রাত নিঝুম হলে চাঁদটা আরো মায়াবী হলে নিবিড় নির্জনতায় বসে বসে কম্পোজ করব। কিন্তু সন্ধ্যা নামার সাথে সাথে রাজ্যের ক্লান্তিরা সব দল বেঁধে উড়ে এসে যেন জুড়ে বসে, আমি নিরুপায় হয়ে তাঁদের কাছে করি আত্তসমর্পন । খেই হারানো সুরটাকে খুঁজে পেয়ে অনেক কষ্টে গুন গুন করে গান বাঁধি কিন্তু গলা ছেড়ে গাইতে গিয়ে দেখি সুরটা কেমন যেন বেখাপ্পা...অবসন্ন মনে হাত বাড়িয়ে গীটার টা’কে আঁকড়ে ধরি...আমার অনেক প্রিয় গীটার...কালো রঙের বডিতে সাদা রঙের চিকন বর্ডার...ছয়টি তারে এলোমেলো আঙ্গুল চালিয়ে টুংটাং আওয়াজ শুনি আর এরই মাঝে কতযে কথা বলা হয়ে যায় আমার প্রিয় গীটার এর সাথে।

সবাই বলে আমি অনেক বদলে গেছি। হ্যাঁ হয়ত ঠিকই বলে। সত্যি বদলে গেছে আমার বাইরে’টা, বদলে গেছে আমার চিরচেনা সেই উচ্ছলতা, চঞ্চল, সদা হাসিখুশি আর ভীষন ছটফটে স্বভাবের সেই মেয়েটা আজ সময়ের যাতাকলে পিষে পিষে কেমন যেন বড্ড ক্লান্ত। কিন্তু একটুও বদলায়নি আমার আমি’টা। এখনও সে পাঁচ বছরের শিশুর মত বায়না ধরে, খুব খুশিতে চিৎকার করে লাফিয়ে ঊঠে, এখনও সে আইসক্রিম না পেলে মন খারাপ করে, ঝুম বৃষ্টিতে মা’এর বকুনি উপেক্ষা করে ভিজতে না পারলে গাল ফুলিয়ে বসে থাকে, অবুঝ কিশোরীর মত কারনের চেয়ে অকারণেই খিলখিলিয়ে হেসে লুটিয়ে পরতে ভালোবাসে, দলবেঁধে হৈ হুল্লোড়ে মেতে ঊঠে সুযোগ পেলেই, যে কোন জিনিস নিয়ে বাজি ধরে জিততে ভালোবাসে, হেরে গেলে নিজেকে শাস্তি দেয় যা তাঁর নিজস্ব বিধান। সেইখানটাতে কোন লজিক খাটেনা, এইখানে তাঁর খুব বেশি স্বেচ্ছাচারিতা যা অনেকেরই ভালোলাগেনা।

ইদানীং তাঁর একটা বাতিক দেখা দিয়েছে। নিজেকে আড়ালে রাখার বাতিক। খুব সহজেই কেমন করে যেন নিজেকে লুকিয়ে ফেলতে পারে আজকাল। কিছুতেই কারও কাছে নিজের ভেতরটাকে ওপেন করতে চায়না। হজম শক্তিও বেড়েছে অনেক, এইতো চাই। সব কিছু থেকে নিজেকে লুকিয়ে রাখার মজাই আলাদা, যে জগতটা’কে কেউ বুঝেনা, কেউ বুঝতেও চায়না সেই জগতটা’কে জনসমক্ষে ওপেন করার কি মানে হয়? তার চেয়ে বরং এই ভালো সেই জগতে একা একা রাজত্ব করা। সবার অগোচরে সেই জগতে নিজের মনে নিজের মত করে ঘুরে বেড়ানো...স্বাধীনভাবে, কোন বাধা নেই, নেই কোন বিপত্তি আর জটিলতা, জবাবদিহিতা নেই আছে কেবল স্বেচ্ছাচারিতা...হা হা হা হা হা...!!!

ব্যস...আর কি চাই? সেই জগতটা’কে নাইবা জানলো কেউ, নাইবা বুঝলো কেউ সেই জগতের সীমা পরিসীমা...এযে এক অজানা, চিরঅচেনা আর অন্যরকম অদ্ভুত জগত...যা একান্তই নিজস্ব...আর খুব বেশি ব্যক্তিগত...!!!

মঙ্গলবার, ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০১১

Kisu kotha....!!!

Sob kotha ki bola hoy? naki sob kotha bola jai? r sob kotha ki bolte ache? aei 3 ta question er ans e "na"...emon onk kotha thake jar kono bekkha ney or bekkha hoyna or bekkha thakte ney...."ami khub sadharon ekjon manus hote cheyechilam...khub khub sadharon...r sadharon hoyei baki sob sadharon manusgulur ridoy ta k touch kort cheyechilam....pouchute cheyechilam sei manusgulu moner monikuthai....ki luv amr tyna? boddo besi luvi ami? r tai hoyto parini ami....parini khub sadharon hoye uthte r parini karo moner monikuthai pouchte.......ha ha ha ha......failure person........failure SSH....!!!



kokhon o jodi mone hoy j ami khub sadharon hote perechi nd ekta manuser moner monikuthai pouchte perechi or ontoto ekta manuser soul ta k touch korte perechi ami....sedin e abr fire asbo tumader majhe....r jodi bertho hoy abr hariye jabo noro pishach der vire....jkhan theke kew chaileo firte parena/ fera hoina.........paro jodi sobai khoma koro amai....vul jodi bujho khoti ney kono...karon ami e ba kake koto tuku perechi bujhte.....r jake bujha jaina take to vul e bujhte hoy........sohoj somikoron........!!!





"Puru Akash Dilam Tumai,

Moner sukhe jao Ure...

Kun Tara ta Porlo khose,

Dekhona kavu pichon fire..!!





sobar mongol kamonai..............the failure "SSH"